গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায় জেনে নিন !

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ : গর্ভবতী হওয়া একজন মায়ের জন্য জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার৷ একজন মায়ের কাছে সন্তান ধারণ ও জন্ম দেওয়ার চেয়ে আনন্দের আর কিছুই না৷ সাধারণত কোনো নারী গর্ভবতী হলে তার দেহে গর্ভবতী হওয়ার কিছু লক্ষন প্রকাশ পায়৷ 

চলুন জেনে নেওয়া যাক,

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সাধারণত গর্ভধারণের ১ থেকে ২ সপ্তাহ পর বোঝা যেতে পারে, তবে এটি নারীভেদে ভিন্ন হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ লক্ষণ ও কখন সেগুলো দেখা যায় তা উল্লেখ করা হলো:

কখন লক্ষণগুলো দেখা যায়:

  • ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার ৬ থেকে ১২ দিনের মধ্যে (অর্থাৎ সহবাসের ১–২ সপ্তাহ পর) কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
  • অনেকেই লক্ষণ বোঝেন মাসিক মিস হওয়ার পর, যা সাধারণত গর্ভধারণের ৪ সপ্তাহে হয়।
লক্ষণদেখা দিতে পারে (সহবাসের পরে আনুমানিক সময়)
মাসিক বন্ধ৪ সপ্তাহ
বমিভাব/মর্নিং সিকনেস২–৬ সপ্তাহ
স্তনে ব্যথা বা ফোলাভাব১–২ সপ্তাহ
হালকা রক্তপাত (ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং)৬–১২ দিন
অতিরিক্ত ক্লান্তি১–২ সপ্তাহ
প্রায়ই প্রস্রাব৪–৬ সপ্তাহ
খাদ্য বা গন্ধে অস্বস্তি২–৬ সপ্তাহ
মুড সুইং বা মনের ওঠানামা১–৩ সপ্তাহ

 

গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান !

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ

মাথা ঘোরা ও মুখ ভর্তি বমিঃ

মাথা ঘোরা ও বমি গর্ভবতী নারীদের অন্যতম লক্ষনসমূহের মধ্যে একটি৷ 

এই সময় গর্ভবতী হবু মা শরীরে দুর্বলতা অনুভব করে এবং প্রায় সময় মাথা ঘুরে পরেও যেতে পারে৷ 

যোনী পথে সামান্য ব্যাথা হতে পারে,এমনকি প্রচন্ড বিষন্নতা অনুভব হতে পারে৷ 

এবং যেমনটা কি আমরা সবাই জানি যে,গর্ভবতী মায়ের দেহে সন্তানের ভ্রুন জরায়ু সংলগ্ন হওয়ার পর, মা কিছুটা বমি বমি অনুভব করে৷ এমন কি অনেক সময় মুখ ভর্তি বমিও করতে পারে৷ 

বমি করলে ঘাবড়ানো যাবে না – নিকটস্থ ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে মায়ের সঠিক চিকিৎসা করতে হবে৷ 

পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়

সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড হয়ে থাকে৷ যখন নারীর পেটে সন্তান আসে তখন এই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়৷ 

তবে – আরো অনে কারণেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ যেমনঃ ওভারিতে সিস্ট হলে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ বা অনেক সময় নারীরা যৌন সমস্যায় ভোগার কারণেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে। 

রক্তপাতঃ 

নারী সন্তান সম্ভবা হলে, কিছুকাল পিরিয়ড চলার পর তা ৮ মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যায়৷ তবে তার পূর্বেও কিছু ২-১ মাস পিরিয়ড চলতে পারে। এই সময়টায় পিরিয়ডের সাথে সামান্য রক্তপাত হয় এবং যোনীপথ চুলকোতে পারে৷ 

অনেকের ক্ষেত্রে আবার সামান্য একটু বেশী রক্তপাত হয়৷ এবং এর পর থেকে পিরিয়ড টানা ৮-৯ মাস বন্ধ থাকে৷ অর্থাৎ সন্তান ধারণকালে কোনো পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়না৷ 

স্তনের আকৃতি পরিবর্তনঃ

গর্ভধারণকালে সন্তান সম্ভবা মায়ের স্তনের আকৃতি ধিরে ধিরে বড় হতে থাকে৷ 

প্রতিমাসে কিছুটা-কিছুটা করে বৃদ্ধি পায়৷ এটি মূলত গোনাডো ট্রপিন বা প্রোজেস্টেরনের মতো হরমনগুলোর কারণে হয়ে থাকে৷ 

অনেক ক্ষেত্রে স্তন ঝুলে নামতে পারে৷ স্তনের শিরা-উপশিরাগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। 

নিপলসের রঙ পরিবর্তনঃ

গর্ভবতী বা সন্তান সম্ভবা মায়ের স্তনের নিপলসের রঙ গোলাপী থেকে খয়রী হতে থাকে৷ 

এছাড়া নিপলস কিছুটা বড় হতে পারে৷ 

মানুসিক পরিবর্তনঃ

এসময় মেয়েদের যৌনচাহিদা ধিরে-ধিরে লোপ পেতে থাকে৷ বিপরীত লিঙের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা লোপ পায়৷ নারীদের ব্যবহার কোমল হয় কিন্তু খানিকটা দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে। 

মূলত এগুলিই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ৷ তবে আরো কিছু লক্ষন রয়েছে,যেগুলি প্রকাশ নাও পেতে পারে৷ 

গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা-

একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম তিন সতর্ক থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কেননা এই সময় বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভবতা সবচেয়ে বেশী থাকে। 

কাজেই প্রথম তিন মাসের সমস্যা একজন নারীর আজীবনের কান্নার কারণ হয়ে যেতে পারে৷ 

  • অবশ্যই এই তিন মাস গর্ভবতী মাকে প্রয়োজনী পুষ্টিকর উপাদানসমূহ সরবরাহ করতে হবে৷ 
  • অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে৷ 
  • মায়ের মানুসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে৷ 
  • নিয়মিত ডাক্তারি চেক-আপ করাতে হবে৷ 
  • আল্ট্রাদনোগ্রামের মাধ্যমে অবশ্যই বাচ্চার দৌহিক গঠন ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে৷ যদি কোন কারণে বাচ্চার শারীরিক গঠনে ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 
  • যেকোনো ধরণের কাচা-বা আধাকাচা আমিষ পরিহার করে চলতে হবে৷ কেননা এটি দেহে ব্যাক্টেরিয়া সৃষ্টির পেছনে অন্যতন কারণ বলে বিবেচ্য৷ এছাড়াও কোন অবস্থাতেই কাঁচা ডিম অথবা কাঁচা দুধ খাওয়া যাবেনা। কাঁচা দুধে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা মায়ের শরীরের ভেতরে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের অপরনীয় ক্ষতি করে ফেলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *