গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ : গর্ভবতী হওয়া একজন মায়ের জন্য জন্য অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার৷ একজন মায়ের কাছে সন্তান ধারণ ও জন্ম দেওয়ার চেয়ে আনন্দের আর কিছুই না৷ সাধারণত কোনো নারী গর্ভবতী হলে তার দেহে গর্ভবতী হওয়ার কিছু লক্ষন প্রকাশ পায়৷
চলুন জেনে নেওয়া যাক,
পোস্টের বিষয়বস্তু
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সাধারণত গর্ভধারণের ১ থেকে ২ সপ্তাহ পর বোঝা যেতে পারে, তবে এটি নারীভেদে ভিন্ন হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ লক্ষণ ও কখন সেগুলো দেখা যায় তা উল্লেখ করা হলো:
কখন লক্ষণগুলো দেখা যায়:
- ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার ৬ থেকে ১২ দিনের মধ্যে (অর্থাৎ সহবাসের ১–২ সপ্তাহ পর) কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- অনেকেই লক্ষণ বোঝেন মাসিক মিস হওয়ার পর, যা সাধারণত গর্ভধারণের ৪ সপ্তাহে হয়।
লক্ষণ | দেখা দিতে পারে (সহবাসের পরে আনুমানিক সময়) |
---|---|
মাসিক বন্ধ | ৪ সপ্তাহ |
বমিভাব/মর্নিং সিকনেস | ২–৬ সপ্তাহ |
স্তনে ব্যথা বা ফোলাভাব | ১–২ সপ্তাহ |
হালকা রক্তপাত (ইমপ্লান্টেশন ব্লিডিং) | ৬–১২ দিন |
অতিরিক্ত ক্লান্তি | ১–২ সপ্তাহ |
প্রায়ই প্রস্রাব | ৪–৬ সপ্তাহ |
খাদ্য বা গন্ধে অস্বস্তি | ২–৬ সপ্তাহ |
মুড সুইং বা মনের ওঠানামা | ১–৩ সপ্তাহ |
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান !
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
মাথা ঘোরা ও মুখ ভর্তি বমিঃ
মাথা ঘোরা ও বমি গর্ভবতী নারীদের অন্যতম লক্ষনসমূহের মধ্যে একটি৷
এই সময় গর্ভবতী হবু মা শরীরে দুর্বলতা অনুভব করে এবং প্রায় সময় মাথা ঘুরে পরেও যেতে পারে৷
যোনী পথে সামান্য ব্যাথা হতে পারে,এমনকি প্রচন্ড বিষন্নতা অনুভব হতে পারে৷
এবং যেমনটা কি আমরা সবাই জানি যে,গর্ভবতী মায়ের দেহে সন্তানের ভ্রুন জরায়ু সংলগ্ন হওয়ার পর, মা কিছুটা বমি বমি অনুভব করে৷ এমন কি অনেক সময় মুখ ভর্তি বমিও করতে পারে৷
বমি করলে ঘাবড়ানো যাবে না – নিকটস্থ ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে মায়ের সঠিক চিকিৎসা করতে হবে৷
পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়
সাধারণত একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীর প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পিরিয়ড হয়ে থাকে৷ যখন নারীর পেটে সন্তান আসে তখন এই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়৷
তবে – আরো অনে কারণেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ যেমনঃ ওভারিতে সিস্ট হলে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ বা অনেক সময় নারীরা যৌন সমস্যায় ভোগার কারণেই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
রক্তপাতঃ
নারী সন্তান সম্ভবা হলে, কিছুকাল পিরিয়ড চলার পর তা ৮ মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যায়৷ তবে তার পূর্বেও কিছু ২-১ মাস পিরিয়ড চলতে পারে। এই সময়টায় পিরিয়ডের সাথে সামান্য রক্তপাত হয় এবং যোনীপথ চুলকোতে পারে৷
অনেকের ক্ষেত্রে আবার সামান্য একটু বেশী রক্তপাত হয়৷ এবং এর পর থেকে পিরিয়ড টানা ৮-৯ মাস বন্ধ থাকে৷ অর্থাৎ সন্তান ধারণকালে কোনো পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়না৷
স্তনের আকৃতি পরিবর্তনঃ
গর্ভধারণকালে সন্তান সম্ভবা মায়ের স্তনের আকৃতি ধিরে ধিরে বড় হতে থাকে৷
প্রতিমাসে কিছুটা-কিছুটা করে বৃদ্ধি পায়৷ এটি মূলত গোনাডো ট্রপিন বা প্রোজেস্টেরনের মতো হরমনগুলোর কারণে হয়ে থাকে৷
অনেক ক্ষেত্রে স্তন ঝুলে নামতে পারে৷ স্তনের শিরা-উপশিরাগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
নিপলসের রঙ পরিবর্তনঃ
গর্ভবতী বা সন্তান সম্ভবা মায়ের স্তনের নিপলসের রঙ গোলাপী থেকে খয়রী হতে থাকে৷
এছাড়া নিপলস কিছুটা বড় হতে পারে৷
মানুসিক পরিবর্তনঃ
এসময় মেয়েদের যৌনচাহিদা ধিরে-ধিরে লোপ পেতে থাকে৷ বিপরীত লিঙের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা লোপ পায়৷ নারীদের ব্যবহার কোমল হয় কিন্তু খানিকটা দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে।
মূলত এগুলিই গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ৷ তবে আরো কিছু লক্ষন রয়েছে,যেগুলি প্রকাশ নাও পেতে পারে৷
গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের সতর্কতা-
একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রথম তিন সতর্ক থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কেননা এই সময় বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভবতা সবচেয়ে বেশী থাকে।
কাজেই প্রথম তিন মাসের সমস্যা একজন নারীর আজীবনের কান্নার কারণ হয়ে যেতে পারে৷
- অবশ্যই এই তিন মাস গর্ভবতী মাকে প্রয়োজনী পুষ্টিকর উপাদানসমূহ সরবরাহ করতে হবে৷
- অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে৷
- মায়ের মানুসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে৷
- নিয়মিত ডাক্তারি চেক-আপ করাতে হবে৷
- আল্ট্রাদনোগ্রামের মাধ্যমে অবশ্যই বাচ্চার দৌহিক গঠন ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে৷ যদি কোন কারণে বাচ্চার শারীরিক গঠনে ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
- যেকোনো ধরণের কাচা-বা আধাকাচা আমিষ পরিহার করে চলতে হবে৷ কেননা এটি দেহে ব্যাক্টেরিয়া সৃষ্টির পেছনে অন্যতন কারণ বলে বিবেচ্য৷ এছাড়াও কোন অবস্থাতেই কাঁচা ডিম অথবা কাঁচা দুধ খাওয়া যাবেনা। কাঁচা দুধে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা মায়ের শরীরের ভেতরে ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের অপরনীয় ক্ষতি করে ফেলতে পারে।