দৈর্ঘ্য কাকে বলে? দৈর্ঘ্যের একক কি

পরিমিতির জগতে দৈর্ঘ্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাশি।আমাদের এই ত্রিমাত্রিক পৃথিবীতে দৈর্ঘ্য তিনটি মাত্রার একটি।তাই,দৈর্ঘ্য কাকে বলে এবং এ সম্পর্কিত বিস্তারিত জেনে রাখা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়। তাই আজ আর্টিকেলে আলোচনা করছি দৈর্ঘ্য কাকে বলে।

দৈর্ঘ্য কাকে বলে?

দুরত্বের পরিমাপকে দৈর্ঘ্য বলে। সাধারণভাবে বললে, কোনো বস্তুর বৃহত্তম মাত্রা হলো দৈর্ঘ্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি আয়তক্ষেত্রের বৃহত্তম মাত্রাকে দৈর্ঘ্য বলে এবং ক্ষুদ্রতম মাত্রাকে প্রস্থ বলে।

আবার একটি ইটের বৃহত্তম মাত্রা ২৪ সেন্টিমিটার। তাই বলা হয়, ইটটির দৈর্ঘ্য ২৪ সেন্টিমিটার। আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতি অনুযায়ী, মাত্রার দুরত্বের পরিমাণই হলো দৈর্ঘ্য। অতএব, বস্তুর মাত্রার পরিমাপকই হলো দৈর্ঘ্য।

অন্যভাবে বলা যায়, জগতে কোনো বস্তুর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের সরল রৈখিক দুরত্ব বা পরিমাপকে দৈর্ঘ্য বলে। এখানে জগত বলতে ত্রিমাত্রিক জগতকেই বুঝানো হচ্ছে।

দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা – এরা সবাই ভিন্ন ভিন্ন দুরত্বকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাই এদের প্রত্যেকটিকে এক-একটি দৈর্ঘ্য বলা যেতে পারে। তবে ত্রিমাত্রিক জগতে দৈর্ঘ্যকে প্রস্থ এবং উচ্চতা থেকে আলাদা করা যায়।

দৈর্ঘ্য কেবল একটি মাত্রার দুরত্বকে পরিমাপ করে। অর্থাৎ একটি মাত্রার পরিমাপকের নাম দৈর্ঘ্য। তাই দৈর্ঘ্যের মাত্রা এক। অতএব, দৈর্ঘ্য একমাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্গত। দৈর্ঘ্য যেমন একটিমাত্র মাত্রাকে পরিমাপ করে, ক্ষেত্রফল তেমনি দুইটি মাত্রা – দৈর্ঘ্য ও প্রস্থকে পরিমাপ করে। তাই ক্ষেত্রফল দ্বিমাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্ভূক্ত। আবার, আয়তন তিনটি মাত্রা – দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতাকে পরিমাপ করে। তাই ত্রিমাত্রিক জ্যামিতি আয়তন নিয়ে আলোচনা করে। অতএব, আয়তন ত্রিমাত্রিক জ্যামিতির সাথে সম্পৃক্ত

আরো পড়ুন ;- জৈব যৌগ কাকে বলে?

দৈর্ঘ্যের একক কি

দৈর্ঘ্য বলতে মূলতঃ দুরত্বকেই বুঝানো হয়। দৈর্ঘ্যকে বিভিন্ন একক দ্বারা পরিমাপ করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য মানুষ বিভিন্ন ধরনের একক ব্যবহার করত। মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গকে দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক হিসাবে ব্যবহার করত। যেমন হাতের দৈর্ঘ্য। আবার একটি নির্দিষ্ট দুরত্ব অতিক্রম করতে কত কদম ফেলতে হয় – এভাবে প্রতি কদমকে দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক হিসাবে ব্যবহার করত। তাছাড়া দুইটি বিখ্যাত স্থানের মধ্যবর্তী পরস্পর দুরত্বকে বড় কোনো দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক হিসাবে ব্যবহার করত।

সভ্যতা বিকাশের সাথে সাথে দৈর্ঘ্য পরিমাপের এসব এককেরও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি অনুযায়ী, দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য যেসব একক ব্যবহার করা হয়, তাহলো মিটার, হেক্টোমিটার, কিলোমিটার, ডেসিমিটার, সেন্টিমিটার ইত্যাদি। আবার আলোকবর্ষ হলো জ্যোতির্বিদ্যায় ব্যবহৃত দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক। তবে দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক – মিলিমিটার, সেন্টিমিটার, ডেকামিটর, কিলোমিটার ইত্যাদি সবই দৈর্ঘ্য পরিমাপের এসব একক মিটার থেকে উৎপত্তি হয়েছে। তাই দৈর্ঘ্য পরিমাপের মূল একক মিটার। অর্থাৎ মিটার হলো দৈর্ঘ্য পরিমাপের ভিত্তি একক।

মেট্রিক পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক

  • ১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার
  • ১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার
  • ১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার
  • ১০০ সেন্টিমিটার = ১ মিটার
  • ১০ মিটার = ১ ডেকামিটার
  • ১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার
  • ১০ হেক্টোমিটার = ১ কিলোমিটার
  • ১ কিলোমিটার = ১০০০ মিটার
  • ১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি (প্রায়)
  • ১ কিলোমি. = ০.৬২ মাইল (প্রায়)
  • ১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি.
  • ১ মাইল = ১.৬০ কিলোমিটার
  • ১ নটিক্যাল মাইল = ১.৮৫৩ কিলোমিটার/ ১৮৫৩.১৮ মিটার
  • ২০০ নটিক্যাল মাইল = ৩৭০ কিলোমিটার (প্রায়)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *