অতিরিক্ত ঘাম (Medical term: Hyperhidrosis) অনেক কারণে হতে পারে। এটি কখনও স্বাভাবিক (গরমে, ব্যায়ামে বা দুশ্চিন্তায়) হয়, আবার কখনও এটি নির্দিষ্ট রোগের লক্ষণও হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম কোন রোগের লক্ষণ
১. প্রাথমিক (Primary) Hyperhidrosis
-
কোনো নির্দিষ্ট রোগ ছাড়াই শুধু ঘামগ্রন্থির অতিরিক্ত সক্রিয়তার কারণে হয়।
-
সাধারণত হাত, পা, বগল, মুখে বেশি হয়।
২. দ্বিতীয়িক (Secondary) Hyperhidrosis
এটি অন্য কোনো রোগ বা অবস্থার কারণে হয়ঃ
-
থাইরয়েডের রোগ (Hyperthyroidism): মেটাবলিজম বেড়ে যায়, ফলে অতিরিক্ত ঘাম, হার্টবিট বেড়ে যাওয়া, ওজন কমা ইত্যাদি দেখা দেয়।
-
ডায়াবেটিস: বিশেষ করে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে (Hypoglycemia) অতিরিক্ত ঘাম হয়।
-
হার্টের রোগ: হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগে ঠাণ্ডা ঘাম হতে পারে।
-
সংক্রমণ বা জ্বর: যেমন টিউবারকুলোসিস (ক্ষয় রোগ), ম্যালেরিয়া ইত্যাদিতে রাতের বেলা অতিরিক্ত ঘাম হয়।
-
স্থূলতা (Obesity): শরীরে চর্বি বেশি হলে সহজেই ঘাম হয়।
-
হরমোন পরিবর্তন: যেমন মেনোপজ (Menopause)-এ হট ফ্ল্যাশের সাথে ঘাম।
-
স্নায়বিক রোগ: যেমন পারকিনসন’স ডিজিজ, স্ট্রোক ইত্যাদি।
-
কিছু ওষুধ: অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট, ডায়াবেটিসের ওষুধ ইত্যাদি।
কোন ভিটামিনের অভাবে গা ঘামে
শরীরে ভিটামিনের অভাবেও ঘাম বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে কিছু ভিটামিন ঘামের সাথে সম্পর্কিতঃ
১. ভিটামিন D এর অভাব
-
ভিটামিন D এর ঘাটতিতে বিশেষ করে মাথা ও কপালে অস্বাভাবিক ঘাম হতে পারে।
-
নবজাতক বা শিশুদের ক্ষেত্রে এটি রিকেটস (হাড় নরম হয়ে যাওয়া)-এর প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।
২. ভিটামিন B কমপ্লেক্সের অভাব
-
বিশেষ করে ভিটামিন B1 (থায়ামিন) এর অভাবে অতিরিক্ত ঘাম, স্নায়ুর দুর্বলতা, সহজে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া দেখা দিতে পারে।
-
ভিটামিন B12 এর অভাব থাকলেও স্নায়ুর সমস্যা ও অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
৩. ভিটামিন C এর অভাব
-
শরীরে প্রদাহ, সংক্রমণ প্রতিরোধ কমে যায়। অনেকে সহজেই ঘামতে থাকেন, বিশেষ করে দুর্বলতার সাথে।
সংক্ষেপে বলা যায় – ভিটামিন D, ভিটামিন B কমপ্লেক্স (B1, B12), ও ভিটামিন C এর অভাব অতিরিক্ত ঘামের কারণ হতে পারে।