আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
ভূমিকা :
ভাষা মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। মাতৃভাষা হলো মানুষের হৃদয়ের সাথে মিশে থাকা প্রথম ভাষা। বিশ্বের ইতিহাসে বাঙালিরা একমাত্র জাতি, যারা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার্থে প্রাণ দিয়েছে। এ জন্যই ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি :
১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্র করলে বাঙালি ছাত্রসমাজ প্রতিবাদ করে। তাদের দাবী ছিল—বাংলা পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভাষা, তাই এটি অবশ্যই রাষ্ট্রভাষা হতে হবে। দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ অনেক শহীদ হন।
ফলাফল :
তাদের আত্মত্যাগের ফলে ১৯৫৬ সালের সংবিধানে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০০ সাল থেকে সারা বিশ্বে দিনটি পালিত হচ্ছে।
তাৎপর্য :
২১ ফেব্রুয়ারি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের সকল জাতির মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এ দিন মানুষ ভাষার প্রতি ভালোবাসা, সম্মান ও আত্মত্যাগের শিক্ষা নেয়।
উপসংহার :
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আমাদের অহংকার, আমাদের আত্মপরিচয়। একুশের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে আমাদের মাতৃভাষার বিকাশ ঘটাতে হবে এবং পাশাপাশি অন্য ভাষার প্রতিও সম্মান দেখাতে হবে।