উপাত্ত কাকে বলে? উপাত্ত কত প্রকার? বিস্তারিত

উপাত্ত কাকে বলে?

পরিসংখ্যানে গণনা কিংবা পরিমাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যকেই বলা হয় data বা উপাত্ত। উপাত্তই হল পরিসংখ্যানের মূল উপজীব্য বিষয়। সংখ্যার সাহায্যে তথ্যের উপস্থাপন করাকে বলা হয় পরিসংখ্যান; আর পরিসংখ্যানে ব্যবহৃত সেই তথ্য নির্দেশক সংখ্যাগুলোই হল উপাত্ত বা ডাটা। 
যেমন – 

‌‌#২ জন শিক্ষার্থী কামাল এবং জাহিদ; কামাল জাহিদের চেয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারে – এটি উপাত্ত নয়; কেননা এই তথ্যটি তুলনাকে নির্দেশ করতে পারলে গুণকে ও পরিমাণকে নির্দেশ করতে

ডাটা হল একটি পরিসেট বা সমষ্টি যা সংখ্যা, লেখা, ছবি, ভিডিও, অডিও ইত্যাদির রূপে উপস্থাপিত হতে পারে। ডাটা সম্পর্কে তথ্য বা সংজ্ঞা হল যা এটি উপস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়।

উপাত্ত এবং ডাটা উভয়ই গণিতে ব্যবহৃত হতে পারে এবং এদের ব্যবহার জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায়।

বিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে?

উত্তর : উপাত্তগুলোকে ক্রম বা শ্রেণি অনুযায়ী সাজিয়ে প্রকাশ করাকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে।

অবিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে?

উত্তর : যে উপাত্তগুলো কোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সাজানো থাকে না তাকে অবিন্যস্ত উপাত্ত বলে।

আরো জানুন ;- সমকোণ কাকে বলে? সমকোণের বৈশিষ্ট্য সমূহ

উপাত্তের প্রকারভেদঃ


প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্তঃ

উপাত্ত যদি উৎস থেকে সরাসরি সংগৃহীত হয়, তবে সেসব উপাত্তকে প্রাথমিক বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত বলা হয়। এধরণের উপাত্ত ব্যবহার করা হলে গবেষণা বা পরিসংখ্যানের প্রাপ্ত ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতা বেশি থাকে।
যেমন – বার্ষিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত ফলাফল এর উপাত্ত

মাধ্যমিক বা পরোক্ষ উপাত্তঃ

পরোক্ষ উৎস থেকে সংগৃহীত উপাত্ত সমূহকে মাধ্যমিক উপাত্ত বলে। যেমন পৃথিবীর কয়েকটি বড় শহরের জানুয়ারী মাসের তাপমাত্রা আমাদের প্রয়োজন। যেভাবে গণিতের প্রাপ্ত নম্বরগুলো সংগ্রহ করেছি সেভাবে তাপমাত্রার জন্য আমাদের সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের সংগৃহীত উপাত্ত আমরা আমাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারি। আর এটি হবে মাধ্যমিক উপাত্ত। এভাবে সংগৃহীত উপাত্তের নির্ভর যোগ্যতা অনেক কম হয়ে থাকে।

উপাত্ত ২ ধরণেরঃ

১.বিন্যস্ত উপাত্ত
২.অবিন্যস্ত উপাত্ত 

অবিন্যস্ত

উপরে বর্ণিত শিক্ষার্থীদের গণিতে প্রাপ্ত নম্বর গুলো এলোমেলো ভাবে দেওয়া আছে। তাই এগুলো হলো অবিন্যস্ত উপাত্ত। নম্বরগুলো মানের কোন ক্রমে সাজানো নেই। অর্থাৎ উপাত্তগুলো যদি কোন প্রকার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সাজানো না হয় তখন তাকে অবিন্যস্ত উপাত্ত বলে।

বিন্যস্ত

সংগৃহীত উপাত্ত কোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বা মানের উর্ধ্বক্রম বা অধক্রম অনুসারে সাজানো হলে তাকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে।
৩৬, ৪৫, ৪৫, ৪৮, ৫৪, ৫৫, ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৮, ৭০, ৭৩, ৭৬, ৭৬, ৮৭, ৯,০, ৯৩, ৯৭
এভাবে সাজানো উপাত্তসমূহকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে।

তথ্য ও উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য


১. সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত কাঁচামাল সমূহকে ডেটা বা উপাত্ত বলে। অন্যদিকে ডেটাকে প্রক্রিয়াকরণ করে যে অর্থবহ ফলাফল পাওয়া যায়, তাকে তথ্য বলে। 
২. ডেটা হচ্ছে প্রক্রিয়াকরণের পূর্বের অবস্থা। তথ্য হচ্ছে প্রক্রিয়াকরণের পরের অবস্থা।
৩. উপাত্ত সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। অন্যদিকে তথ্য সরাসরি ব্যবহার করা যায়।
৪. উপাত্ত দ্বারা যে কোন বিষয়ে পুরোপুরি ভাবার্থ প্রকাশ পায় না। অন্যদিকে তথ্য দ্বারা যে কোন বিষয়ে পুরোপুরি ভাবার্থ প্রকাশ পায়।
৫. উপাত্ত তথ্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডেটা প্রক্রিয়াকরণের পর তথ্যে রূপান্তরিত হয়।
৬. সব উপাত্তই তথ্য নয়। অন্যদিকে সব তথ্যই উপাত্ত হতে পারে।
৭. উপাত্ত রূপান্তরের সময় সমস্ত অপ্রাসঙ্গিক তথ্য এবং পরিসংখ্যান বাছাই করা হয়। কিন্তু তথ্য সবসময় তার প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যাশার জন্য সুনির্দিষ্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *