তরঙ্গ কাকে বলে? তরঙ্গের প্রকারভেদ সমূহ উদাহরণ সহ

বস্তুর পৃষ্ঠকে উপরে-নিচে বা সামান্য পরিমাণ পরিবর্তন করে যে প্রচলিত বিস্তৃতি উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় তরঙ্গ। এটি অধিকাংশ ক্ষেত্রে হালকা বা অস্থির বস্তুগুলি থেকে উৎপন্ন হতে পারে, যেমন পানির, বাতাসের, আলোর তরঙ্গ ইত্যাদি।

তরঙ্গ কাকে বলে উদাহরণ সহ

যে পর্যাবৃত্ত আন্দোলন কোনো জড় মাধ্যমের একস্থান থেকে অন্যস্থানে শক্তি সঞ্চারিত করে কিন্তু মাধ্যমের কণাগুলোকে স্থানান্তরিত করে না তাকে তরঙ্গ (Wave) বলে।

পুকুরের স্থির পানিতে ঢিল ফেলা হলে ঢিলটি পানি স্পর্শ করলে ঐ স্থানের পানির কণাগুলো আন্দোলিত হয়। এ কণাগুলো আবার পার্শ্ববর্তী স্থির পানির কণাগুলোকে আন্দোলিত করে। এভাবে কণা থেকে কণাতে স্থানান্তরিত আন্দোলন অবশেষে পুকুরের পাড়ে পৌঁছে। কিন্তু এই আন্দোলনের ফলে পানির কোনো কণাই তার সাম্যাবস্থান থেকে বেশি দূরে যায় না।

আরো পড়ুন ;- শব্দ কাকে বলে? শব্দ কত প্রকার ও কি কি? উদাহরণ সহ

তরঙ্গ সংক্রান্ত কয়েকটি সংজ্ঞাঃ

  1. পূর্ণ দোলন (Complete oscillation) : সরল ছন্দিত স্পন্দন সম্পন্ন কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে একই নিয়মে একটি নির্দিষ্ট পথে আবার ঐ বিন্দুতে ফিরে এলে তাকে পূর্ণ দোলন বলে।
  2. পর্যায়কাল (Time period) : পর্যাবৃত্ত গতি সম্পন্ন কোন বস্তুর একটি পূর্ণ কম্পন বা পর্যায় সম্পন্ন করতে যে সময় লাগে তা পর্যায়কাল।
  3. কম্পাঙ্ক (Frequency) : তরঙ্গস্থিত স্পন্দিত একটি বস্তু প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো পূর্ণ তরঙ্গ সৃষ্টি হয় তাকে তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বলে।
  4. বিস্তার (Amplitude) : তরঙ্গস্থিত স্পন্দিত একটি বস্তু কণার সাম্যাবস্থান থেকে পরিমাপিত যেকোন এক দিকের সর্বাধিক সরণকে ঐ তরঙ্গের বিস্তার।
  5. দশা (Phase) : তরঙ্গ সঞ্চালনকারী কোনো কণার যেকোনো মুহূর্তের গতির সম্যক অবস্থানকে তার দশা বলে।
  6. আদি দশা (Epoch) : তরঙ্গস্থিত স্পন্দিত একটি বস্তুকণার সময় পরিমাপ শুরুর পূর্বের দশাকে তরঙ্গের আদি দশা বলে।
  7. তরঙ্গমুখ (Wavefront) : তরঙ্গস্থিত সমদশাসম্পন্ন বস্তুকণাগুলো যে তলে অবস্থান করে তাকে তরঙ্গের তরঙ্গমুখ বলে।

তরঙ্গ কত প্রকার ও কি কি

তরঙ্গের প্রকারভেদ দুই টি

অনুপ্রস্থ তরঙ্গ কাকে বলে

অনুপ্রস্থ : যে তরঙ্গ কম্পনের দিকের সাথে লম্বভাবে অগ্রসর হয় তাকে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ বলে।

অনুপ্রস্থ তরঙ্গের উদাহরণ হল একটি পানির পুল যা পানিতে উঠতে থাকে। যখন কোন প্রতিস্থাপন উদ্ভাবন না হয় তখন এই পুলের পানি উপরের দিকে উঠতে থাকে এবং পানি একই দূরত্বে একই সময়ে উঠে এবং নীচে আসে। এই তরঙ্গটি অনুপ্রস্থ তরঙ্গ হিসাবে পরিচিত।

অন্য উদাহরণ হল একটি একটি সাধারণ ফাঁদ বা সরঞ্জাম যা কোনও তরঙ্গের সাথে প্রবাসিত হয়। একটি একটি ফাঁদ উপর নীচে নড়বে এবং পরস্পর সাপেক্ষে অন্তদূরত্ব রাখবে, যা স্থির থাকবে যখন ফাঁদ উঁচু বা নিচু হবে। এটি একটি অনুপ্রস্থ তরঙ্গের উদাহরণ।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ কাকে বলে


অনুদৈর্ঘ্য : যে তরঙ্গ কম্পনের দিকের সাথে সমান্তরালভাবে অগ্রসর হয় তাকে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ বলে। বায়ু মাধ্যমে শব্দের তরঙ্গ অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের উদাহরণ।

অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের উদাহরণ হল বিভিন্ন ধরনের আলোর তরঙ্গগুলি যেমন রেডিও বা টেলিভিশন তরঙ্গ, ইঞ্জিনিয়ারিং ও পরিষেবামূলক উদ্যোগে ব্যবহৃত হওয়া মাইক্রোওয়েভ এবং একটি উপগ্রহ যা দূরে বার্ষিক গ্রহীণ করে।

অন্য উদাহরণ হল সমুদ্রের তরঙ্গ, যেখানে আলো সমুদ্রের সাথে প্রসারিত হয় এবং দূরে না যেতে হয়। সমুদ্র তরঙ্গ একটি অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ হিসাবে পরিচিত।

এছাড়াও একটি দুর্গম বাঁকানো দ্বীপে প্রচলিত অন্য একটি উদাহরণ হল আবার্টন তরঙ্গ, যা মুখ্যতঃ জৈব ও ভৌত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এই তরঙ্গ দীর্ঘ হয় এবং এর চলন ব্যবধান ও শক্তির মান বেশ নিম্ন থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *