পিরিয়ডের লক্ষণ বনাম গর্ভাবস্থার লক্ষণ

নারীদের শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় পিরিয়ডের লক্ষণ বনাম গর্ভাবস্থার লক্ষণ একই রকম মনে হতে পারে। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে পিরিয়ডের লক্ষণ ও গর্ভাবস্থার লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য, শারীরিক পরিবর্তনের কারণ এবং সঠিকভাবে চিহ্নিত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। সচেতনতা বাড়ানোই এখানে মূল লক্ষ্য, যাতে নারীরা নিজেদের শরীর সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারেন।

পিরিয়ডের লক্ষণ বনাম গর্ভাবস্থার লক্ষণ

পিরিয়ড (মাসিক) এবং গর্ভাবস্থা — দুইয়েরই প্রাথমিক লক্ষণ অনেকটা মিল থাকে, তাই অনেক সময় বোঝা কঠিন হয় যে আপনি পিরিয়ড আসার আগে আছেন, না কি গর্ভবতী হয়েছেন। নিচে আমি পার্থক্যগুলো সহজভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছি

পিরিয়ডের আগে বা PMS (Pre-Menstrual Syndrome) এর লক্ষণ

পিরিয়ড আসার ১–২ সপ্তাহ আগে দেখা দিতে পারে:

লক্ষণ বিস্তারিত
পেটব্যথা বা কোমর ব্যথা জরায়ু সংকোচনের কারণে ব্যথা হয়
স্তন ফুলে যাওয়া বা ব্যথা হরমোন পরিবর্তনের ফলে টান টান অনুভব হয়
মুড সুইং / খিটখিটে ভাব ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন ওঠানামায় মেজাজ পরিবর্তন
ফুলে থাকা / গ্যাস / বমি ভাব হজমে সমস্যা ও পানি জমে থাকা
চকোলেট, মিষ্টি বা নোনতা খাবারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে
ব্রণ ওঠা ত্বকে তেল নিঃসরণ বেড়ে যায়
রক্তপাত শুরু হয় শেষ পর্যন্ত মাসিকের মাধ্যমে রক্তপাত হয়

গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ

নিষেকের ১–৩ সপ্তাহ পর দেখা দিতে পারে:

লক্ষণ বিস্তারিত
পিরিয়ড না হওয়া (Missed Period) সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ
স্তনে পরিবর্তন স্তন ফুলে, ব্যথা করে, নিপল কালচে হয়
অতিরিক্ত ক্লান্তি বা ঘুম ঘুম ভাব প্রোজেস্টেরন বৃদ্ধি পেলে শরীর দুর্বল লাগে
বমি ভাব / সকালের বমি (Morning sickness) সাধারণত ২–৮ সপ্তাহে শুরু হয়
হালকা রক্তপাত বা স্পটিং “Implantation bleeding” হতে পারে, পিরিয়ডের চেয়ে কম রক্তপাত হয়
প্রস্রাবের চাপ বেড়ে যাওয়া জরায়ু বড় হলে ব্লাডারে চাপ পড়ে
খাবারের প্রতি অরুচি বা হঠাৎ নির্দিষ্ট খাবারের ইচ্ছে হরমোন পরিবর্তনের কারণে
হালকা তাপমাত্রা বৃদ্ধি শরীরের বেসাল টেম্পারেচার সামান্য বেড়ে যেতে পারে

মূল পার্থক্যগুলো সংক্ষেপে

বিষয় পিরিয়ডের আগে গর্ভাবস্থা
রক্তপাত স্বাভাবিক বা ভারী হালকা স্পটিং হতে পারে বা একেবারে বন্ধ থাকে
সময়কাল নির্দিষ্ট চক্রে আসে দেরি হয় বা আসে না
স্তনের পরিবর্তন পিরিয়ড শুরু হলে কমে যায় ক্রমে বাড়তে থাকে
ক্লান্তি পিরিয়ড শুরু হলে কমে যায় চলতেই থাকে
বমি ভাব কম বা নেই সাধারণত সকালে বেশি থাকে

নিশ্চিত হওয়ার উপায়

সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো —

  1. Home pregnancy test kit (HCG test) — পিরিয়ড মিস হওয়ার ১ সপ্তাহ পর সকালে প্রস্রাবের প্রথম অংশে টেস্ট করুন।

  2. ডাক্তারি পরামর্শ ও রক্ত পরীক্ষা (Beta HCG) — ১০০% নিশ্চিতভাবে ফলাফল জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *