শ্বসন কাকে বলে?

শ্বসন কাকে বলে: যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আমাদের জীবকোষস্থ খাদ্যবস্তু অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে জারিত হয়ে খাদ্যস্থ রাসায়নিক শক্তি গতিশক্তি ও তাপ শক্তিতে রূপভেদ করে তার ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জল উৎপন্ন হয় এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় শ্বসন।

শ্বসন কাকে বলে

শ্বসন (Respiration) হলো একটি জৈব প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জীব কোষে খাদ্য (বিশেষ করে গ্লুকোজ) ভেঙে শক্তি উৎপন্ন হয়।

“জীবের কোষে অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে জটিল জৈব খাদ্যকে ভেঙে সরল পদার্থে পরিণত করে যে প্রক্রিয়ায় শক্তি (ATP) উৎপন্ন হয়, তাকে শ্বসন বলে।”

শ্বসন এর প্রকারভেদ

শ্বসন দুই প্রকারের।

সবাত শ্বসন
অবাত শ্বসন।

সবাত শ্বসন কাকে বলে


যে শ্বসন পদ্ধতি বায়ুজীবী জীবকোষে শ্বসন বস্তু মুক্ত অক্সিজেন উপস্থিত সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল এবং কার্বন ডাই অক্সাইড পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে নির্গত হয় তাকে সবাত শ্বসন বলে।

সবাত শ্বসন এর স্থান : এককোষী প্রাণী অ্যামিবা থেকে শুরু করে উন্নত শ্রেণীর বহুকোষী উদ্ভিদ এবং প্রাণীদেহে প্রতিটি সজিব কোষে এই ধরণের শ্বসন সংঘটিত হয়।
এই ধরণের শ্বসন কোষস্থ খাদ্য প্রধানত গ্লুকোজ কোষের সাইটোপ্লাজমে অক্সিজেন এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কতগুলি উৎসেচকের সহায়তায় আংশিক ভাবে জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড এ পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়াকে EMP পথ বলা হয়।
1 গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে 686 কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।

অবাত শ্বসন কাকে বলে


যে শ্বসন পদ্ধতিতে অবায়ুজীবী জীব কোষে মুক্ত অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে শ্বসন বস্তু অক্সিজেনযুক্ত যৌগের অক্সিজেন কর্তৃক জারিত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলে পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু মধ্যস্তশক্তির আংশিক নির্গমন ঘটে তাকে অবাত শ্বসন বলে।

অবাত শ্বসন এর স্থান : অবাত শ্বসন ডিনাইটিফাইং ব্যাকটেরিয়া, সালফার ব্যাকটেরিয়া, মিথেন ব্যাকটেরিয়া তে দেখা যায়।

অবাত শ্বসন 1 গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে 50 কিলোক্যালোরি তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। এটি কোষের সাইটোপ্লাজম এর ঘটে।
পরবর্তী সময়ে আবারও হাজির হবো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে। গুরুত্বপূর্ণ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। এছাড়াও কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তা আমাদের কমেন্ট করে জানান।

পরিসংখ্যান কাকে বলে ? 

শ্বসনের গুরুত্ব

জীবদেহে শাসনের গুরুত্ব বা তাৎপর্য নীচে আলোচনা করা হলো:

  •  উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের সময় সৌরশক্তি খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তি রূপে আবদ্ধ হয়। এই শক্তি শ্বসনের সময় তাপ শক্তি বা গতিশক্তিরূপে মুক্ত হয়ে জীবদেহের যাবতীয় বিপাক ক্রিয়া গুলি প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়।
  • জোনাকি বা কোন সামুদ্রিক প্রাণী দেহ থেকে আমরা যে আলোর বিকীর্ণ দেখতে পাই তা স্বসন প্রক্রিয়ার সময়ে উৎপন্ন শক্তির রূপান্তর। ইলেকট্রিক-রে নামক এক ধরনের মাছের দেহে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তা, শ্বসনের ফলে উৎপন্ন শক্তির রূপান্তর। আবার স্তন্যপায়ী অথবা পক্ষী শ্রেণির প্রাণীদের রক্তের যে উষ্ণতা আমরা অনুভব করতে পারি তা শ্বসন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন তাপ শক্তি।

শ্বসন এক ধরনের অপচিতি বিপাক প্রক্রিয়া। কারণ, শ্বসন প্রক্রিয়ায় জটিল খাদ্যবস্তু বিশ্লিষ্ট হয়ে সরল উপাদানে পরিণত হয়। এতে জীব দেহের শুষ্ক ওজন হ্রাস পায়। এই কারণে শ্বসনকে এক ধরনের অপচিতি বিপাক প্রক্রিয়া বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *