সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য ১০ টি

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য- সাধু ভাষা প্রাচীন, সংস্কৃতঘেঁষা এবং গম্ভীর শৈলীর; এর বাক্যরীতি দীর্ঘ ও আড়ম্বরপূর্ণ। যেমন— “তাহার গৃহে গমন করিলাম।” অপরদিকে চলিত ভাষা সহজ, সংক্ষিপ্ত ও কথ্যরীতি-ঘনিষ্ঠ, যা দৈনন্দিন জীবনে প্রচলিত। যেমন— “তার বাড়িতে গেলাম।”

সাহিত্যচর্চার প্রারম্ভে সাধু ভাষার ব্যবহার ছিল বেশি, কিন্তু আধুনিক যুগে চলিত ভাষাই সর্বজনগ্রাহ্য। সংবাদপত্র, শিক্ষা ও গল্প-উপন্যাসে চলিত ভাষা বহুল ব্যবহৃত হলেও সাধু ভাষা মূলত আনুষ্ঠানিক ও ঐতিহাসিক রচনায় সীমাবদ্ধ। সুতরাং সাধু ভাষা গাম্ভীর্যের প্রতীক, আর চলিত ভাষা সাধারণের সহজ যোগাযোগের মাধ্যম।

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য বাংলার দুটি প্রধান রূপ—

 সাধু ভাষা

  • প্রাচীন ও সংস্কৃতঘেঁষা রূপ।

  • শব্দরূপ ও ক্রিয়াপদ সংস্কৃত অনুসারে পূর্ণভাবে ব্যবহৃত হয়।

  • বাক্য গঠন ভারী ও আড়ম্বরপূর্ণ শোনায়।

  • মূলত সাহিত্য, প্রবন্ধ, ধর্মীয় বা গাম্ভীর্যপূর্ণ রচনায় ব্যবহৃত হতো।

  • উদাহরণ:

    • “তাহার গৃহে গমন করিলাম।”

    • “সে বিদ্যালয়ে গিয়াছিল।”

 চলিত ভাষা

  • দৈনন্দিন জীবনে প্রচলিত, সহজ ও সরল রূপ।

  • ক্রিয়াপদের রূপ সংকুচিত, সংক্ষিপ্ত এবং কথোপকথনমুখী।

  • কথ্য রীতির কাছাকাছি হওয়ায় পাঠকের কাছে স্বাভাবিক লাগে।

  • আধুনিক সাহিত্য, পত্র-পত্রিকা, সংবাদ, শিক্ষা ইত্যাদিতে এ ভাষাই বেশি ব্যবহৃত হয়।

  • উদাহরণ:

    • “তার বাড়িতে গেলাম।”

    • “সে স্কুলে গিয়েছিল।”

সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য সংক্ষেপে

বিষয় সাধু ভাষা চলিত ভাষা
উৎস সংস্কৃতঘেঁষা কথ্য রীতি অনুসৃত
রূপ দীর্ঘ, জটিল সংক্ষিপ্ত, সহজ
ব্যবহার প্রাচীন সাহিত্য, গাম্ভীর্যপূর্ণ লেখা আধুনিক সাহিত্য, দৈনন্দিন ব্যবহার
উদাহরণ “করিয়াছিলাম”, “তাহার” “করেছিলাম”, “তার”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *