সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য- সাধু ভাষা প্রাচীন, সংস্কৃতঘেঁষা এবং গম্ভীর শৈলীর; এর বাক্যরীতি দীর্ঘ ও আড়ম্বরপূর্ণ। যেমন— “তাহার গৃহে গমন করিলাম।” অপরদিকে চলিত ভাষা সহজ, সংক্ষিপ্ত ও কথ্যরীতি-ঘনিষ্ঠ, যা দৈনন্দিন জীবনে প্রচলিত। যেমন— “তার বাড়িতে গেলাম।”
সাহিত্যচর্চার প্রারম্ভে সাধু ভাষার ব্যবহার ছিল বেশি, কিন্তু আধুনিক যুগে চলিত ভাষাই সর্বজনগ্রাহ্য। সংবাদপত্র, শিক্ষা ও গল্প-উপন্যাসে চলিত ভাষা বহুল ব্যবহৃত হলেও সাধু ভাষা মূলত আনুষ্ঠানিক ও ঐতিহাসিক রচনায় সীমাবদ্ধ। সুতরাং সাধু ভাষা গাম্ভীর্যের প্রতীক, আর চলিত ভাষা সাধারণের সহজ যোগাযোগের মাধ্যম।
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য বাংলার দুটি প্রধান রূপ—
সাধু ভাষা
-
প্রাচীন ও সংস্কৃতঘেঁষা রূপ।
-
শব্দরূপ ও ক্রিয়াপদ সংস্কৃত অনুসারে পূর্ণভাবে ব্যবহৃত হয়।
-
বাক্য গঠন ভারী ও আড়ম্বরপূর্ণ শোনায়।
-
মূলত সাহিত্য, প্রবন্ধ, ধর্মীয় বা গাম্ভীর্যপূর্ণ রচনায় ব্যবহৃত হতো।
-
উদাহরণ:
-
“তাহার গৃহে গমন করিলাম।”
-
“সে বিদ্যালয়ে গিয়াছিল।”
-
চলিত ভাষা
-
দৈনন্দিন জীবনে প্রচলিত, সহজ ও সরল রূপ।
-
ক্রিয়াপদের রূপ সংকুচিত, সংক্ষিপ্ত এবং কথোপকথনমুখী।
-
কথ্য রীতির কাছাকাছি হওয়ায় পাঠকের কাছে স্বাভাবিক লাগে।
-
আধুনিক সাহিত্য, পত্র-পত্রিকা, সংবাদ, শিক্ষা ইত্যাদিতে এ ভাষাই বেশি ব্যবহৃত হয়।
-
উদাহরণ:
-
“তার বাড়িতে গেলাম।”
-
“সে স্কুলে গিয়েছিল।”
-
সাধু ও চলিত ভাষার পার্থক্য সংক্ষেপে
বিষয় | সাধু ভাষা | চলিত ভাষা |
---|---|---|
উৎস | সংস্কৃতঘেঁষা | কথ্য রীতি অনুসৃত |
রূপ | দীর্ঘ, জটিল | সংক্ষিপ্ত, সহজ |
ব্যবহার | প্রাচীন সাহিত্য, গাম্ভীর্যপূর্ণ লেখা | আধুনিক সাহিত্য, দৈনন্দিন ব্যবহার |
উদাহরণ | “করিয়াছিলাম”, “তাহার” | “করেছিলাম”, “তার” |