সারা গায়ে চুলকানির কারণ ও ঔষধ

সারা গায়ে চুলকানির কারণ হতে পারে অ্যালার্জি, ড্রাই স্কিন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, লিভারের অসুখ, রক্তের সমস্যা বা এমনকি মানসিক চাপও। এই চুলকানি কখনও কখনও রাতে বেড়ে যায়, আবার কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো খাবার, ওষুধ বা ধুলাবালির সংস্পর্শেও শুরু হতে পারে।

সারা গায়ে (সমগ্র শরীরে) চুলকানির অনেক রকম কারণ থাকতে পারে — কখনও ত্বকের সমস্যা, আবার কখনও শরীরের ভেতরের অসুস্থতার কারণে হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে কারণ ও চিকিৎসা দেওয়া হলো

সারা গায়ে চুলকানির কারণ

  1. ত্বকজনিত কারণ:

    • শুষ্ক ত্বক (Dry skin / Xerosis)

    • অ্যালার্জি (Allergic reaction)

    • একজিমা (Eczema / Dermatitis)

    • স্ক্যাবিস (Scabies – চুলকানি মাইট দ্বারা সংক্রমণ)

    • ফাঙ্গাল ইনফেকশন (দাদ বা ছত্রাক)

    • পোকামাকড়ের কামড়

  2. শরীরজনিত (Systemic) কারণ:

    • লিভারের সমস্যা (যেমন হেপাটাইটিস, জন্ডিস)

    • কিডনির সমস্যা

    • থাইরয়েডের সমস্যা

    • ডায়াবেটিস

    • রক্তে আয়রন কমে যাওয়া (Anemia)

    • কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

  3. অন্যান্য কারণ:

    • মানসিক চাপ বা উদ্বেগ (Anxiety-induced itching)

    • অতিরিক্ত ঘাম বা ধুলোবালিতে সংস্পর্শ

    • সাবান বা ডিটারজেন্টে অ্যালার্জি

 

আরো পড়ুন –

পুরুষাঙ্গের চুলকানি দূর করার ক্রিম ও ঘরোয়া উপায়

যোনিতে চুলকানি দূর করার ক্রিমের নাম বাংলাদেশ

সারা গায়ে চুলকানির ঔষধ

সঠিকভাবে কারণ নির্ণয় না করে ওষুধ ব্যবহার করলে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। এজন্য সারা গায়ে চুলকানির ঔষধ নির্বাচন করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং উপসর্গভেদে উপযুক্ত ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

নোট: নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধ ব্যবহার করবেন না। কারণ চুলকানির কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা আলাদা হতে পারে।

১. সাধারণ চুলকানি বা শুষ্ক ত্বকের জন্য:

  • Moisturizer: Vaseline, Cetaphil, Physiogel বা Emollient ক্রিম ব্যবহার করুন দিনে ২–৩ বার।

  • Antihistamine (চুলকানি কমাতে):

    • Cetirizine 10mg (রাতে ১টা)

    • Fexofenadine 120mg বা Loratadine 10mg (দিনে ১টা)

  • Mild steroid cream (যদি লালচে ফুসকুড়ি থাকে):

    • Hydrocortisone 1% ক্রিম (সীমিত সময়ের জন্য)

২. স্ক্যাবিস (গায়ে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ও রাতে বেশি চুলকানি):

  • Permethrin 5% ক্রিম: সারা শরীরে (ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত) লাগিয়ে ৮–১২ ঘণ্টা রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন।

  • পরিবারের সবাইকে একসাথে চিকিৎসা করা জরুরি।

  • কাপড়, বিছানা গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকান।

৩. ফাঙ্গাল ইনফেকশন (দাদ জাতীয়):

  • Clotrimazole / Luliconazole ক্রিম: আক্রান্ত জায়গায় দিনে ২ বার লাগান।

  • প্রয়োজন হলে ডাক্তার মুখে খাওয়ার অ্যান্টিফাঙ্গাল দিতে পারেন (যেমন Fluconazole, Itraconazole)।

৪. শরীরজনিত কারণ হলে:

  • লিভার, কিডনি বা রক্তের পরীক্ষা দরকার হতে পারে।

  • সেক্ষেত্রে চুলকানির চিকিৎসার পাশাপাশি মূল রোগের চিকিৎসা করলেই উপশম হয়।

সহজ ঘরোয়া যত্ন:

  • খুব গরম পানি দিয়ে গোসল না করে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।

  • সাবান কম ব্যবহার করুন; মাইল্ড বা বেবি সাবান ব্যবহার করুন।

  • ঘাম হলে দ্রুত শুকনো কাপড় পরুন।

  • ঢিলেঢালা, পরিষ্কার পোশাক পরুন।

  • ধুলোবালি ও অ্যালার্জিজনিত বস্তু এড়িয়ে চলুন।

চুলকানি যদিও আপাতদৃষ্টিতে ছোট একটি সমস্যা মনে হয়, কিন্তু এর পেছনে থাকা মূল কারণ জানা না থাকলে এটি ক্রমে জটিল ত্বকজনিত রোগে রূপ নিতে পারে। তাই সারা গায়ে চুলকানির কারণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা এবং প্রয়োজনমতো চিকিৎসা নেওয়া খুবই জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *