পরাগায়ন কাকে বলে বা পরাগায়ন কি

আজকে আলোচনা করবো পরাগায়ন কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?

পরাগায়ন কাকে বলে

ফুলের পরাগধানী হতে পরাগরেণুর একই ফুলে অথবা একই জাতের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়াকে পরাগায়ন বলে। পরাগায়নকে পরাগ সংযোগও বলা হয়। বায়ু, পানি, কীট-পতঙ্গ, পাখি, বাদুড় ইত্যাদি পরাগায়নের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

পরাগায়ন ফল ও বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়ার পূর্বশর্ত।আপনি পরাগায়নকে এভাবেও বলতে পারেন, পরাগায়ন হল এক ফুল থেকে অন্য ফুলের পরাগ রেণু স্থানান্তর। সাধারণত পরাগায়ণগুলি পোকামাকড় দ্বারা বাহিত হয়ে থাকে। আজকে আমরা পরাগায়ণ নিয়ে আলোচনা করবো।

পরাগায়ন (Pollination) কাকে বলে?

পরাগায়ন হলো একটি ফুলের পরাগকণাকে (pollen grain) বীজাণু উৎপাদনকারী অঙ্গ (পুংকেশর) থেকে ডিম্বাণু ধারণকারী অঙ্গ (স্ত্রীকেশর বা বৃন্তের গর্ভাশয়)-এ পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া, যাতে নিষেক (fertilization) সম্ভব হয়।

পরাগায়ন কত প্রকার ও কি কি?

পরাগায়ন ২ প্রকার।

  • স্ব পরাগায়ন
  • পর-পরাগায়ন ।

স্ব পরাগায়ন কাকে বলে ?

 যখন একটি ফুলের পরাগ একই ফুল বা অন্য ফুলকে পরাগায়িত করে তখন তাকে স্ব পরাগায়ন বলে। অর্থা এটি একই ফুলের মধ্যে বা একই গাছের দুটি ফুলের মধ্যে ঘটে। 

আরো জানুন ;- প্রতীক কাকে বলে? প্রতীক কত প্রকার ও কী কী?

পর-পরাগায়ন কাকে বলে ?

যখন একটি ফুলের পরাগ একটি ভিন্ন উদ্ভিদ থেকে একটি ফুলে স্থানান্তরিত হয় তখন ক্রস পরাগায়ণ ঘটে। অর্থাৎ এটি একই প্রজাতির বিভিন্ন উদ্ভিদে দুটি ফুলের মধ্যে ঘটে। ক্রস পরাগায়নের প্রক্রিয়াটির জন্য বায়ু, জল, পোকামাকড়, পাখি, বাদুড়, শামুক এবং অন্যান্য প্রাণীদের সহায়তা প্রয়োজন।

পরাগায়ন গুরুত্বঃ পরাগায়ন শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয়। এটি অত্যাবশ্যক কারণ এটি আমাদের খাওয়ার ফলের উৎপাদন করে এবং আরও বেশি উদ্ভিদ তৈরি করার জন্য বীজ তৈরি করে। ফুল দিয়ে পরাগায়ন শুরু হয়। অর্থাৎ পরাগায়ন এর মাধ্যমে গাছ ফুল ও ফল উৎপাদন করে থাকে তাই এটির গুরুত্ব অপরিসীম।

আরো পড়ুন ;- লেন্স কাকে বলে? লেন্স কত প্রকার ও কি কি?

স্ব পরাগায়ন ও পর পরাগায়নের মধ্যে পার্থক্য

১। স্ব-পরাগায়নের অন্যকোন নিয়ামক বা বাহকের দরকার হয়না বলে পরাগায়নের সম্ভাবনা অনেকটা নিশ্চিত হয়। অন্যদিকে পর-পরাগায়নের বিভিন্ন বাহকের দরকার হয় বলে পতঙ্গের জীবিকা বংশধারা টিকে থাকে।

২। স্ব-পরাগায়নের অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুল উভয়লিঙ্গ হওয়ায় একাধিক ফুলের প্রয়োজন হয়না। অন্যদিকে পর-পরাগায়নের অধিকাংশ এক লিঙ্গিক ফুল বলে একই উদ্ভিদে বেশি পরিমানে পুষ্প পাওয়া যায়।

৩। স্ব-পরাগায়নের ফলে প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। অন্যদিকে পর-পরাগায়ন বাহক আকৃষ্ট করার জন্য ফুলে মধু সৃষ্টি হয় বলে আমরা মৌচাক থেকে মধু ও মোম পাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *