পোস্টের বিষয়বস্তু
ভগ্নাংশ কাকে বলে?
দুটি পূর্ণ সংখ্যাকে অনুপাত বা ভাগ করলে যে রাশি পাওয়া যায় তাকে ভগ্নাংশ বা Fraction বলে। ভগ্নাংশের উপরের সংখ্যাটিকে বলে লব আর নিচের সংখ্যাটিকে বলে হর।
অন্যভাবে বলা যায় কোন কিছু বা বস্তু যদি ভাঙ্গা হয়ে থাকে তবে তার ভগ্নাংশ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি উদাহরণস্বরূপ একটি কাঠের টুকরা হতে পারে যা ভাঙ্গা হয়ে গেছে, তাহলে সেই টুকরাটি ভগ্নাংশ হিসাবে উল্লেখ করা হবে।
ভগ্নাংশের প্রকারভেদ
ভগ্নাংশকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। নিচে এগুলো নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো।
১.সাধারণ ভগ্নাংশ:
কোনো সংখ্যাকে নির্দিষ্ট ভাগে বিভক্ত করে তাকে হর দ্বারা এবং নির্দিষ্ট অংশ হতে গৃহীত অংশকে লব দ্বারা চিহ্নিত করে গাণিতিকভাবে প্রকাশ করলে যে ভগ্নাংশ তৈরি হয় তাই সাধারণ ভগ্নাংশ বলে।
সাধারণ ভগ্নাংশ আবার তিনভাগে বিভক্ত। যথা :
ক.প্রকৃত ভগ্নাংশ:
কোন ভগ্নাংশের লব ছোট ও হর বড় হলে তাকে প্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়।যেমন – ৫/৭ , ২/৭, ৩/১০
খ.অপ্রকৃত ভগ্নাংশ:
কোন ভগ্নাংশের লব বড় ও হর ছোট হলে তাকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশ বলা হয়।যেমন – ৭/৩ , ৭/৫ , ৮/৭
গ.মিশ্র ভগ্নাংশ;
যে ভগ্নাংশটি একটি অখণ্ড সংখ্যা এবং একটি প্রকৃত ভগ্নাংশের সমন্বয়ে গঠিত হয় তাকে মিশ্র ভগ্নাংশ বলে।
২.দশমিক ভগ্নাংশ:
কোন ভগ্নাংশকে যখন দশমিক(.) চিহ্নের দ্বারা প্রকাশ করা হয়,তখন তাকে দশমিক ভগ্নাংশ বলে। যেমন – ৬/১২ = ০.২
দশমিক ভগ্নাংশ আবার দু প্রকার।যথা:
ক.সসীম দশমিক ভগ্নাংশ:
যে দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর ডানে সসীম সংখ্যা থাকে তাকে সসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে।যেমন- ১৫/২=৭.৫
খ.অসীম দশমিক ভগ্নাংশ:
যে দশমিক ভগ্নাংশের দশমিক বিন্দুর পর অঙ্কগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটলে তাকে অসীম দশমিক ভগ্নাংশ বলে।যেমন ১৩ কে ৩ ভাগ করলে, ৪.৪৪৪এরকম একই সংখ্যা বার বার পুনরাবৃত্তি হবে।
এগুলো ছাড়াও আরও কয়েক ধরণের ভগ্নাংশ আছে।যেমনঃ
সমতুল :
যদি দুইটি ভগ্নাংশের মধ্যে প্রথম ভগ্নাংশের হর ও দ্বিতীয় ভগ্নাংশের লব এবং দ্বিতীয় ভগ্নাংশের হর ও প্রথম ভগ্নাংশের লব এর গুনফল যদি সমান হয় তবে তাকে সমতুল ভগ্নাংশ বলে।
আংশিক :
যখন কোন ভগ্নাংশকে একাধিক ভগ্নাংশের যোগফলরূপে প্রকাশ করা হয়,তাহলে যাদের যোগফলরূপে প্রকাশ করা হয়,তাদের প্রত্যেকটিকে প্রথমোক্ত ভগ্নাংশটির আংশিক ভগ্নাংশ বলা হয়।
সমহর :
দুইটি ভগ্নাংশে হর একই হলে তাকে সমহর ভগ্নাংশ বলে।যথা :১/৫,২/৫
সমলব:
দুইটি ভগ্নাংশে লব একই হলে তাকে সমলব ভগ্নাংশ বলে।যথা:২/৩,২/৫
আরো পড়ুন ;- কেন্দ্রীয় প্রবণতা কাকে বলে ও কি ?
ভগ্নাংশের কিছু তথ্যঃ
- সরল অঙ্ক করার সময় মিশ্র ভগ্নাংশকে অপ্রকৃত ভগ্নাংশে রূপান্তর করে নিতে হয়।
- দুটি ভগ্নাংশের হর একই হলে যে ভগ্নাংশের লব বড় সেটার মান বড়। ৫/২ এর চেয়ে ৭/২ এর মান বড়।
- দুটি ভগ্নাংশের লব একই হলে যে ভগ্নাংশের হর ছোট সেই ভগ্নাংশটি বড়। ৫/৩ এর চেয়ে ৫/২ এর মান বড়।
- যেকোনো প্রকৃত ভগ্নাংশের মান ১ থেকে ছোট হয়। যেমন ১/২ এর মান ১ এর ছোট।
- ভগ্নাংশের যোগফল বা বিয়োগফল সব সময় লঘিষ্ঠ তথা ছোট করে প্রকাশ করতে হয়। যেমন ৪/৮ কে লিখতে হবে ১/২।
- কোনো ভগ্নাংশের লবকে হর এবং হরকে লব বানিয়ে দিলে বিপরীত ভগ্নাংশ পাওয়া যায়।