ব্যবস্থাপনা কাকে বলে: একটি প্রতিষ্ঠান উদ্দেশ্য অর্জনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করে সেগুলোকে একত্রে ব্যবস্থাপনা বলে। প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ, বস্তুগত সম্পদ, আর্থিক সম্পদ ও তথ্য সম্পদ হলো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সম্পদ। আর এ সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মসংস্থান, নির্দেশনা ও নেতৃত্বদান, সমন্বয় সাধন, প্রেরণা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
পোস্টের বিষয়বস্তু
ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
ব্যবস্থাপনা বিশারদগণ ব্যবস্থাপনাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখা করেছেন। এবার আসুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।
আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol) ম্যানেজমেন্ট কাকে বলে? এর উত্তরে বলেন, “ব্যবস্থাপনা হলো পূর্বানুমান ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা, সংগঠিত করা, নির্দেশ প্রদান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ।”
জর্জ আর, টেরি (George R. Terry) ব্যবস্থাপনা কাকে বলে? এর উত্তরে বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি স্বতন্ত্র সামাজিক প্রক্রিয়া যা মানুষ ও সম্পদসমূহের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও তা অর্জনের নিমিত্তে পরিকল্পনা, সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণ কাজের সাথে সম্পৃক্ত।”
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা হলো কাজের বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং কাজকে এর ক্ষুদ্রতম কারিগরী উপাদানসমূহে বিভক্তিকরণ এবং তারপর তাদের সবচেয়ে দক্ষ সমাবেশে পুনর্বিন্যাসকরণ।
কাজসমূহের পরিকল্পনা এবং কর্মীদের পর্যবেক্ষণের একটি প্রস্তাবনা যা শ্রমবিভাজন, কর্মীদের ইচ্ছা মতো কাজ করার স্বাধীনতার অপসারণ এবং দক্ষ কাজের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিষদ যে পরিবর্তনসমূহ আনা জরুরী মনে করেন, এই বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তাকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলে।
গৃহ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
পরিবারের লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য বিভিন্ন সম্পদ ব্যবহারে পরিকল্পনা, সংগঠন নিয়ন্ত্রন ও মূল্যায়ন করাকে এক কথায় গৃহ ব্যবস্থাপনা বলে।
গৃহ ব্যবস্থাপনা কতকগুলো ধাপের কর্মপদ্ধতি যেটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয় । গৃহ ব্যবস্থাপনা গৃহের সব কর্মকান্ডকে সচল রাখে।
পরিকল্পনা-
গৃহ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির প্রথম ধাপ পরিকল্পনা করা। যে কোনো কাজ করতে হলে আগে কাজটি কেন করা হবে, কিভাবে করা হবে, কে বা কারা করবে ইত্যাদি সম্বন্ধে ভাবনাচিন্তা করার নামই পরিকল্পনা। পরিকল্পনা করে নিলে কোন কাজ কখন করা হবে তা সহজেই বোঝা যায়।
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা
প্রতিষ্ঠানে নিয়ােজিত কর্মী তথা মানব সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়ে
ব্যবস্থাপনার যে অংশ কাজ করে তা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হিসেবে
পরিচিত। এটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, তাদের সংগ্রহ, নির্বাচন ও
নিয়ােগ, উন্নয়ন, কর্মীদের কাজে উদ্ধুদ্ধকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সাথে
সম্পর্কিত। মানব সম্পদ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের চালিকাশক্তি। অর্থাৎ, ব্যবস্থাপনায় মানব সম্পর্কিত দিক
হচ্ছে মানবে সম্পদ ব্যবস্থাপনা। এটি মানব সম্পদের সংগ্রহ, উন্নয়ন,
প্রেষণা ও সংরক্ষণ সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রক্রিয়া
ব্যাংক ব্যবস্থাপনা কাকে বলে
ব্যাংক ব্যবসায় উদ্বৃত্ত সঞ্চয় আমানত হিসেবে বা শেয়ার হোল্ডারদের পুঁজি হিসাবে সংগ্রহ করে এবং প্রয়োজন বোধে অন্যান্য উৎস থেকে রূপ গ্রহণ করে তহবিল গঠন করা হয়। এরূপ ওছবিল হতে সংগ্রহ করতে ব্যাংককে সংগ্রহ খরচসহ অন্যান্য আনুসঙ্গিক ব্যয় বহন করতে হয়। সুতরাং ঋণ অথবা অন্যান্য সেবা প্রদান কালে তহবিল খরচ তথা প্রশাসনিক খক বাদ দিয়ে ব্যাংকের লাভ হয় এমনভাবে ব্যাংক তহবিল সংগ্রহ ও বিনিয়োগ করা দক্ষ ও সফল ব্যাংক ব্যবস্থাপনার পূর্বশর্ত।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে এরূপ একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান যার আওতায় পড়ে- যথাযথ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ, দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং দুর্যোগের সাড়া দান ও পুনরুদ্ধার ইত্যাদি কার্যক্রম।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো তিনটিঃ
১। দুর্যোগের সময় জীবন, সম্পদ এবং পরিবেশের যে ক্ষতি হয়ে থাকে তা এড়ানো বা ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করা।
২। প্রয়োজন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের মধ্যে অল্প সময়ে সকল প্রকার ত্রাণ পৌঁছানো ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা এবং
৩। দুর্যোগ পরবর্তী পুনরুদ্ধারের কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করা।
কর্মী ব্যবস্থাপনা
সাধারণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের যে অংশ প্রতিষ্ঠানের মানবিয় দিক নিয়ে কাজ করে তাকে কর্মী ব্যবস্থাপনা বলে। কর্মক্ষেত্র এবং সত্তার সাথে তাদের সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত এমন দিকনির্দেশনাটি পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট হিসাবে পরিচিত। কর্মী পরিচালনার সুযোগ সীমিত এবং একটি বিপরীতমুখী পদ্ধতির রয়েছে, যেখানে শ্রমিকদের হাতিয়ার হিসাবে দেখা হয়। কর্মীদের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম কর্মীদের সুযোগ এবং লক্ষ্য, কৌশল, সংস্থার উন্নয়নের শর্তগুলি আনয়ন করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের মানব শক্তির উপর একটি লক্ষ্যযুক্ত প্রভাব।
ব্যবস্থাপনার স্তর কয়টি ও কি কি
আপনাকে জানানোর জন্য বলছি ব্যবস্থাপনার কোন প্রকারভেদ নেই। কিন্তু ব্যবস্থাপনার অনেক কিছু মূলনীতি আচে। তার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার মোট তিনটি স্তর আছে। যেমন-
- উচ্চ পর্যায়ের স্তর
- মধ্যম পর্যায়ের স্তর এবং
- নিম্ন পর্যায়ের স্তর