আমাদের সবার জন্য বল কাকে বলে? বল কত প্রকার? বিষয়টি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকলে নানা বিধ বিষয় সম্পর্কে জেনে থাকি কিন্তু আমাদের জানার কোনো শেষ নেই। biddabd.com ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন প্রশ্নের উক্তর খুঁজে পাবেন, যা জেনে অনেক উপকৃত হতে পারেন। আপনাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বিস্তারিত তথ্য এখানে তুলে ধরেছি। আশা করছি এটি আপনাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করবে।
পোস্টের বিষয়বস্তু
বল কাকে বলে?
বল হলো এমন একটি বাহ্যিক প্রভাব যা কোন বস্তুর গতির, দিকের বা আকৃতিগত পরিবর্তন সাধন করতে পারে। বলের সবচেয়ে সহজ ধারনা হলো টানা বা ঠেলা যা কোন ভর যুক্ত পদার্থের বা বস্তুর বেগের পরিবর্তন ঘটায়।। অর্থাৎ এর প্রভাবে স্থির বস্তু গতিশীল হয় বা গতিশীল বস্তুর গতির পরিবর্তন হয় বা স্থির অবস্থার সৃষ্টি হয়। শুধু মান দিয়ে বলকে প্রকাশ করা যায় না এবং বলে মান ও দিক উভয়ই আছে বিধায় বল একটি ভেক্টর রাশি। এর একক নিউটন।
বলের ইংরেজি শব্দ Force। নিউটনের প্রথম সূত্রে প্রথমবার বল শব্দটির প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। যে বাহ্যিক প্রভাব কোন স্থির বস্তু ওপর ক্রিয়া করে স্থির বস্তুকে গতিশীল করে বা করতে চায় অথবা গতিশীল বস্তর ওপর ক্রিয়া করে গতিশীল বস্তুর অবস্থান পরিবর্তন করে বা করতে চায়। সেই বাহ্যিক প্রভাব কে বল বলে।
বল হলো এমন একটি ভৌত রাশি যা কোন বস্তুর গতির অবস্থা বা আকৃতি পরিবর্তন করতে সক্ষম।
বলের প্রকারভেদ
প্রকৃতিতে বিভিন্ন ধরণের বল রয়েছে। আপনাকে যদি কিছুক্ষন সময় দেওয়া হয় তাহলে আপনি বলের বিশাল একটা লিস্ট করতে পারবেন। এর মধ্যে কিছু মৌলিক বল আর কিছু যৌগিক বল।
মৌলিক বল:
যে সকল বল অকৃত্তিম অর্থাৎ অন্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না এবং বিশ্লেষণ করলে ঐ বল ব্যতীত আর কোন বল পাওয়া যায় না বরং অন্যান্য বল এই সকল বল থেকে উৎপন্ন হয় তাকে মৌলিক বল বলে। যেমন, মহাকর্ষ, তড়িৎ – চুম্বকীয় ইত্যাদি।
যৌগিক বল:
মৌলিক বল ব্যতীত সকল বল যৌগিক বল। অর্থাৎ এসব বল মৌলিক বল হতে উৎপন্ন হয়। যেমন, ঘর্ষণ , স্থিতিস্থাপক ইত্যাদি।
প্রকৃতিতে মৌলিক বল চার প্রকার। যথা-
মহাকর্ষ বল –
মহাকর্ষ বলকে ইংরেজিতে Gravitational force বলে। এই সৃষ্টিজগতের সকল বস্তু তাদের ভরের কারণে একে অপরকে যে বল দিয়ে আকর্ষণ করে সেটাই হচ্ছে মহাকর্ষ বল। এই বলের পরিমাণ ক্রিয়াশীল বস্তু দুটির ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং বস্তুদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক । এই মহাকর্ষ বলের প্রভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘোরে, গ্যালাক্সির ভেতরে নক্ষত্ররা ঘুরপাক খায়।
মাধ্যাকর্ষণ বল –
আমাদের ওপর যখন পৃথিবীর মহাকর্ষ বল কাজ করে তখন তাকে মাধ্যাকর্ষণ বলে। এই মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে আমরা নিজেদের ওজনের অনুভূতি পাই। এই মাধ্যাকর্ষণ বল আমাদেরকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে টেনে রেখেছে।
তড়িৎ-চুম্বকীয় বল –
তড়িৎ চৌম্বক বলকে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলও বলা হয়। ইংরেজিতে এ বলকে Electromagnetic force বলে। দুটি আহিত বা চার্জিত কণা তাদের আধানের কারণে একে অপরের উপর যে আকর্ষন বা বিকর্ষন অনুভব করে তাকে তড়িৎ চৌম্বক বা বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল বলে। এই বল মহাকর্ষ বল অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। এর আপেক্ষিক সবলতা ১০৩৬।
সবল নিউক্লীয় বল –
সবল নিউক্লীয় বলকে ইংরেজিতে Weak nuclear force বলে। সবল নিউক্লীয়বল সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে শক্তিশালী বল। তড়িৎ চৌম্বকবল থেকেও একশ গুণ বেশি শক্তিশালী সবল নিউক্লীয় বল।
দুর্বল নিউক্লিয় বল –
দুর্বল নিউক্লিয় বলকে ইংরেজিতে Weak nuclear force বলে। যে স্বল্প পাল্লার ও স্বল্প মানের বল নিউক্লিয়াসের মধ্যে ক্রিয়া করে অস্থিশীলতার সৃষ্টি করে তাকে দুর্বল নিউক্লিয় বল বলে।