আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ছিল পাকিস্তান সরকারের দায়ের করা একটি রাজনৈতিক মামলা, যা ১৯৬৮ সালে প্রকাশ্যে আসে। এই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল যে, শেখ মুজিবুর রহমানসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন বাঙালি নেতা, সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা ভারতের সহযোগিতায় পূর্ব পাকিস্তানকে (আজকের বাংলাদেশ) পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করেছিলেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কি
মামলার প্রেক্ষাপট
-
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব পাকিস্তানের উপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য চালিয়ে আসছিল।
-
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ছয় দফা দাবি পেশ করার পর পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতার আন্দোলন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
-
এর জবাবে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে ও অন্যান্য নেতাদের দমন করার জন্য এই মামলা সাজায়।
মামলার মূল অভিযোগ
-
শেখ মুজিবুর রহমান ও আরও ৩৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
-
বলা হয়, তারা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় পাকিস্তান ভাঙার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।
-
মূল উদ্দেশ্য ছিল মুজিবকে দেশদ্রোহী প্রমাণ করে পূর্ব পাকিস্তানের গণআন্দোলন স্তব্ধ করা।
ফলাফল
-
এই মামলা চলাকালীন দেশে তীব্র জনবিক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
-
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনের চাপে সরকারকে মামলা প্রত্যাহার করতে হয় এবং সকল আসামি মুক্তি পান।
-
এই আন্দোলনের ফলেই শেখ মুজিবুর রহমান “বঙ্গবন্ধু” উপাধি পান।
সংক্ষেপে, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা ছিল পাকিস্তানি শাসকদের একটি ভুয়া রাজনৈতিক মামলা, যা শেষ পর্যন্ত বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলনকে আরও বেগবান করেছিল।