গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ ও করণীয়

গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বা প্রসবকাল ঘনিয়ে এলে জরায়ু মুখ (cervix) ধীরে ধীরে নরম, পাতলা (effaced) ও প্রসারিত (dilated) হতে শুরু করে। এটাই “জরায়ু মুখ খোলা” বা cervical dilatation এর লক্ষণ। সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে:

গর্ভাবস্থায় জরায়ু মুখ খোলার লক্ষণ

  1. শ্লেষ্মা প্লাগ (mucus plug) বের হওয়া

    • ঘন, আঠালো, কখনও লালচে বা রক্তমিশ্রিত স্রাব বের হতে পারে।

  2. নিয়মিত জরায়ুর ব্যথা/সঙ্কোচন (contraction)

    • তলপেটে ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসে এবং নিয়মিত সময়ে হয়।

    • ব্যথা ধীরে ধীরে তীব্র ও ঘন ঘন হয়।

  3. পেলভিক চাপ অনুভব

    • শিশুর মাথা নিচে নেমে আসায় তলপেটে ভারীভাব বা চাপ অনুভূত হয়।

  4. পানি ভাঙা (rupture of membranes)

    • হঠাৎ করে স্বচ্ছ বা হালকা তরল বের হতে পারে। এটা অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড।

  5. পিঠে ব্যথা বৃদ্ধি

    • বিশেষ করে কোমরের নিচের দিকে টানা ব্যথা হতে পারে।

  6. অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা (Vaginal Examination)

    • ডাক্তার বা মিডওয়াইফ হাত দিয়ে পরীক্ষা করে জানান কত সেন্টিমিটার পর্যন্ত জরায়ু মুখ খোলা আছে।

    • প্রসব শুরু হলে সাধারণত ৩–৪ সেন্টিমিটার খোলা থাকে, আর সম্পূর্ণ খোলা মানে ১০ সেন্টিমিটার।

 তবে সব নারী একইভাবে লক্ষণ অনুভব করেন না। কারও ক্ষেত্রে প্রথমে স্রাব দেখা যায়, আবার কারও ক্ষেত্রে প্রথমেই নিয়মিত ব্যথা শুরু হয়।

যদি হঠাৎ পানি ভেঙে যায়, রক্তপাত হয়, বা প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয় তবে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য করণীয়

যদি চিকিৎসকের মনে হয় যে মায়ের বা শিশুর জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রসব করানো দরকার, তখন তারা বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন, যেমন:

  • ঔষধ (প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন জেল বা ট্যাবলেট) দিয়ে জরায়ুর মুখ নরম করা।

  • অক্সিটোসিন ইনজেকশন/ড্রিপ দিয়ে জরায়ুর সংকোচন বাড়ানো।

  • মেমব্রেন স্ট্রিপিং বা আর্টিফিশিয়াল রাপচার অফ মেমব্রেন (ARM) করে পানিভাঙা ঘটানো।

করণীয়

  • কোনোভাবেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে বা নিজের ইচ্ছেমতো জরায়ুর মুখ খোলার চেষ্টা করবেন না।

  • নিয়মিত প্রসবপূর্ব (Antenatal) চেকআপ করুন।

  • প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে চলুন।

 যদি আপনার প্রশ্নটা হয় গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ খোলার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায় বা প্রসব সহজ করা যায়, তাহলে কিছু সাধারণ উপদেশ:

  • হালকা হাঁটা বা ব্যায়াম (চিকিৎসকের অনুমতি সাপেক্ষে)

  • সুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত পানি পান

  • মানসিকভাবে রিলাক্স থাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *