বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ রচনা
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত কারণে এ দেশে প্রায় প্রতিবছরই কোনো না কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। এসব দুর্যোগ মানুষের জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধরন
বাংলাদেশে সবচেয়ে সাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলো বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, খরা ও ভূমিকম্প।
বন্যা : বর্ষাকালে অতি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রায় প্রতি বছরই দেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা পানিতে ডুবে যায়।
ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস : উপকূলীয় অঞ্চলে মে ও অক্টোবর মাসে এ দুর্যোগ বেশি ঘটে। এটি প্রাণহানি ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের পাশাপাশি ফসল ও পশুসম্পদ নষ্ট করে।
নদীভাঙন : নদীর তীব্র স্রোতের কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা হয়।
খরা : বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে খরার কারণে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভূমিকম্প : বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। সাম্প্রতিক সময়ে ছোট-বড় কম্পন মানুষকে শঙ্কিত করে তুলছে।
প্রভাব
প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের প্রাণহানি ঘটে, গৃহহীনতা বাড়ে, ফসল নষ্ট হয়, গবাদি পশুর ক্ষতি হয় এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি মারাত্মক আকার ধারণ করে। একই সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হয়।
প্রতিকার
প্রাকৃতিক দুর্যোগ পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়, তবে ক্ষতি কমানো সম্ভব। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি, পূর্বাভাস ব্যবস্থা উন্নয়ন, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দুর্যোগ-সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তোলা, বৃক্ষরোপণ এবং সুষ্ঠু ত্রাণ ব্যবস্থার প্রয়োজন।
উপসংহার
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশের মানুষের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সরকার, জনগণ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এসব দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম হতে পারি। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।