পথের পাঁচালী মূলত গ্রামবাংলার দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবার হরিহর ও সর্বজা রায়–এর জীবনসংগ্রামের কাহিনি। তাদের দুই সন্তান—দুর্গা ও আপু—কে কেন্দ্র করে গল্পটি এগিয়ে চলে।
পোস্টের বিষয়বস্তু
পথের পাঁচালী উপন্যাসের বিষয়বস্তু
1. দারিদ্র্য ও সংগ্রামের চিত্র
হরিহর একজন সৎ এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ, কিন্তু সংসার চালানোর মতো স্থায়ী উপার্জন নেই। দারিদ্র্যের কারণে পরিবারে অভাব-অনটন লেগেই থাকে। এই অভাব-বাস্তবতা উপন্যাসটির মূল পটভূমি।
2. গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য ও প্রকৃতি
উপন্যাসে গ্রামবাংলার প্রকৃতি—বন, ক্ষেত, জলাশয়, বৃষ্টির দিন, কাশবন, গ্রামের পথ—এসব অসাধারণ সৌন্দর্যে ভরপুর। আপু-দুর্গার চোখ দিয়ে পাঠক প্রকৃতির সরল সৌন্দর্য অনুভব করে।
3. শৈশবের নিষ্কলুষতা
দুর্গা ও আপু—দুই ভাইবোনের খেলাধুলা, দুষ্টুমি, কৌতূহল, স্বপ্ন—এসবই শৈশবের মায়াময় জগৎ তৈরি করে। তাদের সহজ-সরল পৃথিবীই গল্পের প্রাণ।
4. পারিবারিক বন্ধন
মা সর্বজার কঠিন সংগ্রাম, বাবার ভালোবাসা, ভাইবোনের সম্পর্ক—এসব পারিবারিক আবেগ গল্পটিকে মানবিক করে তোলে।
5. মৃত্যুবেদনা ও বিয়োগান্ত নাটকীয়তা
দুর্গার মৃত্যু উপন্যাসের সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা। এর মাধ্যমে জীবনের নশ্বরতা ও দারিদ্র্যের নির্মমতা স্পষ্ট হয়। পরে হরিহরের মৃত্যু-সংবাদ এবং পরিবারের বিপর্যয়ের ধারাবাহিকতা গভীর বেদনাবোধ তৈরি করে।
6. আশা ও ভবিষ্যতের পথে যাত্রা
শেষে আপু ও সর্বজা কাশীতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অভাব-দুঃখ সত্ত্বেও ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত গল্পটিকে নতুন আশার আলো দেখায়।
আরো পড়ুন –
নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী
সারকথা
পথের পাঁচালী হলো—
দারিদ্র্য, প্রকৃতি, শৈশব, পারিবারিক সম্পর্ক ও জীবনের কঠিন বাস্তবতার এক অনন্য মিলন।
গ্রামীণ বাংলার মানবিকতার গল্প—যা বাংলা সাহিত্যের এক অমর কীর্তি।