আজকের আলোচনা কোণ কাকে বলে ? দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়। অন্যভাবে বললে, দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হয়ে যে আকৃতি ধারণ করে তাকে কোণ বলে।
পোস্টের বিষয়বস্তু
কোণ কাকে বলে
দুইটি রেখাংশ পরস্পর প্রান্তবিন্দুতে মিলিত হয়ে যে জ্যামিতিক আকার ধারণ করে তাকে কোণ বলে। তাহলে সহজ করে বললে, দুইটি সরলরেখা পরস্পর মিলিত হলে কোণের উৎপন্ন হয়। এরূপ দুইটি সরলরেখা পরস্পর ছেদ করলে ছেদ বিন্দুতে চারটি কোণের উৎপন্ন হয়।
কোণ কত প্রকার ও কি কি
কোণের নির্দিষ্ট প্রকারভেদ করা একটু কঠিন। তবে আকার-আকৃতি, গঠন ও পরিমাপের ভিত্তিতে কোণের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
- শুণ্যকোণ
- সূক্ষ্মকোণ
- সমকোণ
- স্থূলকোণ
- সরলকোণ
- প্রবৃদ্ধকোণ
- পূর্ণকোণ
- তির্যককোণ
- বিপ্রতীপকোণ
- সন্নিহিতকোণ
- পূরককোণ
- সম্পূরককোণ
- পরিপূরককোণ
- অনুরূপকোণ
- একান্তরকোণ
- ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ
সম্পর্কিত আর্টিকেল ;- সামান্তরিক কাকে বলে ? সামান্তরিকের বৈশিষ্ট্য
সূক্ষ্মকোণ
এক সমকোণ বা ৯০° অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলে।
শুণ্যকোণ
যে কোণের পরিমাপ 0° তাকে শুণ্য কোণ বলে। এক্ষেত্রে, আসলে কোনো কোণ উৎপন্ন হয়নি।
দুইটি কোণের যোগফল ৩৬০° বা চার সমকোণ হলে কোণদুইটিকে পরস্পর পরিপূরককোণ বলে।
অনুরূপকোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়াকোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসব কোণ জোড়া ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির একটি অন্তঃস্থকোণ এবং অপরটি বহিঃস্থকোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর অনুরূপকোণ বলে।
একান্তরকোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়াকোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসবকোণ জোড়া ছেদকের বিপরীত পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থকোণ অথবা উভয়েই বহিঃস্থকোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর একান্তরকোণ বলে।
ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়াকোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যে দুই জোড়া কোণ ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থকোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর ধারাবাহিক অন্তঃস্থকোণ বলে।
সমকোণ
যে কোণের পরিমাপ ৯০° তাকে সমকোণ বলে।
স্থূলকোণ
৯০° অপেক্ষা বড় এবং ১৮০° অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সমকোণ অপেক্ষা বড় এবং সরলকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে।
সরলকোণ
যে কোণের পরিমাপ ১৮০° তাকে সরলকোণ বলে।
প্রবৃদ্ধ কোণ
১৮০° অপেক্ষা বড় এবং ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সরলকোণ অপেক্ষা বড় এবং পূর্ণকোণ বা ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধকোণ বলে।
পূর্ণকোণ
যে কোণের পরিমাপ ৩৬০° তাকে পূর্ণকোণবলে। অন্যভাবে বলা যায়, একটি রশ্মি তার আদি অবস্থান থেকে ঘুরে আবার একই অবস্থান ফিরে আসলে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে পূর্ণকোণ বলে। এ রকম একটি রশ্মি একবার ঘুরে আসলে রশ্মির প্রান্তবিন্দুতে উৎপন্ন কোণের পরিমাপ হয় ৩৬০°। তাই পূর্ণকোণের মান ৩৬০°।
তির্যককোণ
যে কোণের পরিমাপ ৯০° নয় বা ৯০° এর কোনো গুণিতক নয় তাকে তির্যককোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে কোণের মান সমকোণের কোন গুণিতক নয় তাকে তির্যককোণ বলে। সেই হিসাবে, সব সূক্ষ্মকোণ এবং স্থূলকোণই এক একটি তির্যককোণ বলে পরিচিত।
বিপ্রতীপকোণ
একটি কোণের বিপরীত রশ্মি দুইটি ঐ কোণের বিপরীতে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে পূর্বের কোণের বিপ্রতীপকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দুইটি পরস্পরচ্ছেদী সরলরেখা কোনো একটি বিন্দুতে মিলিত হলে, মিলিত বিন্দুতে দুই জোড়া বিপরীতকোণ উৎপন্ন হয়, প্রতিজোড়া বিপরীত কোণের একটিকে অপরটির বিপ্রতীপকোণ বলে। বিপ্রতীপ কোণদ্বয় পরস্পর সমান হয়।
সন্নিহিতকোণ
একই সমতলে অবস্থিত দুইটি কোণের শীর্ষবিন্দু ও একটি রশ্মি যদি সাধারণ হয় এবং কোণ দুইটি, সাধারণ রশ্মির বিপরীত দিকে অবস্থান করে, তবে কোণদুইটিকে পরস্পর সন্নিহিতকোণ বলে। যদি একই শীর্ষবিশিষ্ট দুইটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে এবং কোণ দুইটির কোনো অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ না হয়, তাহলে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিতকোণ বলে।
পূরককোণ
দুইটি কোণের যোগফল ৯০° বা এক সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির পূরককোণ বলে। পরস্পর পূরককোণ দুইটি যদি সন্নিহিত কোণ হয়, তবে সন্নিহিতকোণ দুইটির সাধারণ বাহু ব্যতীত অপর বাহু দুইটি বাহু পরস্পর লম্ব হয়। ইউক্লিডিও জ্যামিতি অনুযায়ী, একটি সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষ্মকোণদ্বয়ের একটি অপরটির পূরককোণ।
সম্পূরককোণ
দুইটি কোণের যোগফল ১৮০° বা দুই সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির সম্পূরককোণ বলে।
পরিপূরককোণ
দুইটি কোণের যোগফল ৩৬০° বা চার সমকোণ হলে কোণ দুইটিকে পরস্পর পরিপূরককোণ বলে।